এই যে করোনাকাল চলছে… এ এক অদ্ভুত সময়। আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে। করোনাসংক্রমিত না হয়ে বেঁচে থাকাটাই যেন আর্ট।
যুদ্ধ-অবস্থা, জরুরি অবস্থায় কারফিউ-এ ঘরে থাকা, ঘরের আলো যাতে বাইরে থেকে বা আকাশ থেকে না দেখা যায়, তেমন রাতযাপনের অভিজ্ঞতা আছে, মুক্তিযুদ্ধে ব্রাশফায়ার করে মেরে ফেলা দেখার অভিজ্ঞতা আছে… এমন অনেক উদাহরণ হতে পারে; কিন্তু কোভিড-১৯, করোনা ভাইরাস, লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, ভেন্টিলেশন ইত্যাদি শব্দ এবং তাদের প্রতিক্রিয়া পুরোটাই নতুন এবং অদ্ভুত। যেন মানুষের সমস্ত সভ্যতা, নানা আবিষ্কার, শিল্প-সংস্কৃতি, হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা গোটা পৃথিবী, স্যাটেলাইট কার্যক্রম, সূর্যের আলো, প্রকৃতির সৌন্দর্য, ঋতুবৈচিত্রময়, রাতের আকাশ, চাঁদ-তারা সবকিছু কেমন যেন বোধশূন্য নিরর্থক মনে হতে থাকল। ঠিক এমন একটি সময়ে ‘FUTURE OF HOPE’ কথাটা শুনলাম। প্রায় হোপলেস পর্যায়ের ‘হোপ’ এবং তার ‘ফিউচার’ নিয়ে চিন্তাভাবনা সৃষ্টিশীল মানুষের পক্ষেই করা সম্ভব।
DURJOY BANGLADESH FOUNDATION (DBF) বাংলাদেশের শিল্পীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রকাশভঙ্গি বিকাশের আন্তর্জাতিক ‘PLATFORM’, যার কর্ণধার দুর্জয় রহমান জয়। বর্তমানে আমেরিকা-অবস্থানকারী শিল্পী বিপাশা হায়াত ও দুর্জয়ের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে, অবাক বিস্ময় নিয়ে ‘Future of Hope’ প্রজেক্টে আমার মতো করেই যুক্ত হলাম। দেশে থাকা তিনজন এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় থাকা ছয়জন শিল্পী সবাই তরুণ বলা যায়, যুক্ত হলো Future of Hope নিয়ে ভাবনা-চিন্তা এবং তা প্রকাশ করার কাজে। এই নয়জন শিল্পী তাদের সৃষ্টিকর্ম দিয়ে আমার ‘HOPELESS’ শব্দ থেকে ‘LESS’ টাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলো, ওদের সাথে একাত্ম হয়ে মুগ্ধ হলাম, উৎসাহিত হলাম। একমাত্রার আড়ষ্ট সময়ে দিনযাপন করেও বহুমাত্রার চিন্তা এবং তাদের দৃশ্যরূপ উপস্থাপন সত্যি উদ্দীপনার এবং আনন্দের।
নয়জন শিল্পীকে আমার শুভেচ্ছা-অভিনন্দন।
শিশির ভট্টাচার্য্য
মেন্টর