সাম্প্রতিককালে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের জীবন ও জীবিকা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কালে প্রান্তিক সৃজনশীল মানুষের জন্য শিল্প কিভাবে অর্থপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে? সামাজিক দূরত্ব রক্ষার কালে শিল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত রাখার পথটাই বা কেমন হতে পারে?
দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় গিদরী বাউলি ফাউন্ডেশন অব আর্টস “ভূমি” নামক একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।কোভিড-১৯ সংকটের সময় গ্রামাঞ্চলের সৃজনশীল মানুষের সাথে যোগ দিয়ে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এই উদ্যোগের প্রথম পর্যায়ে আগামী ৪ মাস শিল্পী কামরুজ্জামান স্বাধীন ঠাকুরগাঁয়ের ৪ টি গ্রামের সাঁওতাল, রাজবংশী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ৬০ টি কারুশিল্পী পরিবারের সাথে যৌথভাবে বেশ কিছু শিল্পকর্ম নির্মাণ করবেন। শিল্প সৃষ্টিতে সম্পৃক্ত থাকার নতুন উপায় অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই উদ্যোগ কারুশিল্পীদের শুধু সৃজনশীল কাজে নিযুক্ত রাখবে না, এই সময়ে এই ৬০ টি পরিবারের ২৫০ জন মানুষের জীবনধারণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও নিশ্চিত করবে। শিল্পকর্মগুলো হবে হস্তচালিত তাঁতবস্ত্র, বাঁশের কাজ, খড় বিচালি এবং ভূমি শিল্প মাধ্যমে। কারুশিল্পীরা নিজ নিজ বাড়িতে শিল্পী কামরুজ্জামান স্বাধীন-এর ভাবনা ও ডিজাইনে শিল্পকর্মগুলো তৈরি করবেন। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগে তৈরি হওয়া শিল্পকর্মগুলো বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হবে।আমরা বিশ্বাস করি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আমরা সংহতি ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই নজিরবিহীন সংকটের উত্তরণ ঘটাতে পারবো।
দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন
দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরের শিল্পকলা ও শিল্পীদের আন্তর্জাতিক শিল্পাঙ্গনে তুলে ধরতে সচেষ্ট। সংগঠনটি বিভিন্ন প্রদর্শনী এবং প্রকাশনাসহ নতুন শিল্পকর্ম তৈরি এবং সামাজিক সৃজনশীলতার চর্চা শিল্পীদের সহায়তা করে থাকে। উল্লেখ্য যে, এই উদ্যোগের সাথে জড়িত শিল্পী কামরুজ্জামান স্বাধীন ইতিপূর্বে দুর্জয় বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘মাঝি’ আর্ট রেসিডেন্সিতে অংশগ্রহণ করেন এবং তার ‘এলিফ্যান্ট ইন দ্যা রুম’ শিল্পকর্মটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক সংগৃহীত হয়েছে।
গিদরী বাউলি ফাউন্ডেশন অব আর্টস
ঠাকুরগাঁয়ের বালিয়া গ্রামে ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে গিদরী বাউলি ফাউন্ডেশন অব আর্টস। বহুমুখী এই সংগঠনের লক্ষ্য বিভিন্ন মাধ্যমের শিল্পী আর স্থানীয় প্রান্তিক গোষ্ঠীর মানুষজনের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক বিনিময়ের সুযোগ তৈরি করা।বাংলাদেশের সমসাময়িক শিল্প চর্চার ধারায় প্রান্তিক মানুষের শিল্পচর্চার ধারাকে সংযুক্ত করে তোলার লক্ষ্যেই গিদরী বাউলি সামাজিক শিল্পচর্চাকে মাধ্যম হিসেবে নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।